আমাদের পুঁজিবাজার নিজস্ব প্রতিবেদক : রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক অস্থিরতায় বছরজুড়ে শেয়ারবাজার মন্দার মধ্যেই ছিল। তবে ধীরগতির বাজারে কিছুটা গতি সঞ্চার করেছিল মে ও জুন মাসে। বছরের অন্য মাসগুলোর তুলনায় জুনে মূল্যসূচক এবং লেনদেন সর্বোচ্চ অবস্থানে ছিল। তবে গড় লেনদেন সবচেয়ে বেশি হয়েছে মে মাসে।
বাজারের অধিকাংশ কোম্পানি জুন সমাপ্ত হওয়ায় ওই সময় বাজার অন্য সময়ের তুলনায় গতিশীল হয়। এছাড়া আয়করে ছাড় পেতে বাজারবিমুখ অনেক বিনিয়োগকারী এই সময় শেয়ার কেনায় জোর দেন। এসব কারণে জুনে শেয়ারবাজার তুলনামূলক ভালো ছিল বলে মনে করছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা।
প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি বছরের ২৪৪ কার্যদিবসে ডিএসই প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৬ হাজার ২০৭ পয়েন্ট থেকে সামান্য বেড়ে ৬ হাজার ২৪৬ পয়েন্টে অবস্থার করছে। তবে মাসের হিসাবে জুনশেষে সর্বোচ্চ ৬ হাজার ৩৪৪ পয়েন্টে অবস্থান করে। জুনের আগের মাসগুলোয় সূচকের ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকলেও জুন-পরবর্তী মাসগুলোয় নিম্নমুখী হতে থাকে।
এর আগে মে মাস শেষে সূচক ছিল ছয় হাজার ৩৪০ পয়েন্টে, এপ্রিল শেষে ছয় হাজার ২৬৩, মার্চ শেষে ছয় হাজার ২৭৬, ফেব্রুয়ারি শেষে ছয় হাজার ২১৭ ও জানুয়ারি শেষে ছিল ছয় হাজার ২৬৭ পয়েন্টে।
অর্থাৎ ফেব্রুয়ারিতে সূচকে পতনের পর জুন পর্যন্ত একটু একটু করে বৃদ্ধি পায় সূচক। যদিও জুলাই শেষে সূচক কমে দাঁড়ায় ছয় হাজার ৩২৫ পয়েন্টে।
এরপর আগস্টে ছয় হাজার ২৯৯, সেপ্টেম্বরে ছয় হাজার ২৮৫, অক্টোবরে ছয় হাজার ২৭৯ ও নভেম্বরে ছয় হাজার ২২৩-এ গিয়ে ঠেকে সূচক। তবে ডিসেম্বরে আবার সূচক সামান্য বেড়েছে।
এদিকে ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই ৩০ সূচকেও জুনকে ঘিরে গতি পরিবর্তন ঘটে। জুন-পূর্ব মাসগুলোয় সূচক ঊর্ধ্বমুখী থাকলেও জুন-পরবর্তী সময়ে তা পড়তে শুরু করে।
এছাড়া ছোট ও মাঝারি কোম্পানিগুলো নিয়ে গঠিত ডিএসইর এসএমই প্ল্যাটফর্মের সূচক ডিএসএমইএক্সে বছরজুড়েই নিম্নমুখী ধারা অব্যাহত ছিল।
২০২৩ সালে মোট লেনদেন হয় ১ লাখ ৪১ হাজার ৫৯ কোটি টাকা। গড়ে লেনদেন হয় ৫৭৮ কোটি ১১ লাখ টাকা। তবে একক দিন হিসাবে সর্বোচ্চ লেনদেন হয় এক হাজার ২৫৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। যদিও মাসের হিসাবে গড়ে সর্বোচ্চ লেনদেন হয় মে মাসে।
ইবিএল সিকিউরিটিজের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, মে মাসে গড় লেনদেন ছিল ৮ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার। জুনে তা কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার। যদিও মে-জুন পরবর্তী সময়ে লেনদেন হ্রাস পেতে থাকে; যা ডিসেম্বরে নেমে আসে ৪ কোটি ৯০ লাখ ডলারে।
বছরের অন্য মাসগুলোর মধ্যে জানুয়ারিতে গড় লেনদেন ছিল ৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার। ফেব্রুয়ারিতে তা কমে দাঁড়ায় চার কোটি ৩০ লাখ ডলার। মার্চে তা কিছুটা বেড়ে দাঁড়ায় চার কোটি ৫০ লাখ ডলার ও এপ্রিলে পাঁচ কোটি ৪০ লাখ ডলার।
এছাড়া জুলাইয়ে গড় লেনদেন হয় সাত কোটি ৭০ লাখ ডলার। আগস্টে তা প্রায় অর্ধেকে নামে। এই সময় গড় লেনদেন হয় চার কোটি ডলার। সেপ্টেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়ায় পাঁচ কোটি ৭০ লাখ ডলার, অক্টোবরে আবার কমে হয় চার কোটি ২০ লাখ ডলার ও নভেম্বর তিন কোটি ৯০ লাখ ডলার, যা বছরের সর্বনিম্ন লেনদেন।
Leave a Reply