নিজস্ব প্রতিবেদক : সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি লিংক নজরে আসে ঢাকার ব্যবসায়ী হাবিব রাজুর। লিংকের শিরোনাম ছিল ‘দ্রুত লোন নিন’। হাবিব লিংকে চাপ দিতেই বন্ধ হয়ে যায় মুঠোফোন। ১০ মিনিট পরই মুঠোফোনটি আবার স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয়। এক ঘণ্টা পর হাবিবের মুঠোফোনে আর্থিক সেবা (এমএসএফ) নম্বরে ২৩ হাজার ৪০০ টাকা আসে। পরে একটি বিদেশি নম্বর থেকে তাঁকে ফোন করে বলা হয়, ঋণের আবেদন করায় ওই টাকা দেওয়া হয়েছে। এক সপ্তাহ পর তাঁকে সুদসহ ৩৯ হাজার ১৫০ টাকা পরিশোধ করতে হবে।
গত মে মাসে এভাবেই প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়েন হাবিব। আজ শনিবার তিনি বলেন, ‘আমি মুঠোফোন ভিডিও দেখছিলাম। হঠাৎ একটি লিংকে অসাবধানতাবশত চাপ পড়ে যায়। কিছুক্ষণ পর থেকে ফোন করে আমাকে বলা হয়, আপনি ঋণের জন্য আবেদন করেছিলেন। আপনাকে ঋণ দেওয়া হয়েছে।’
লিংকে চাপ দেওয়ার পর হাবিবের মুঠোফোনে শুধু টাকাই আসেনি। তিনি বলেন, তাঁর মুঠোফোনের নিয়ন্ত্রণও নিয়ে নেন প্রতারক চক্রের সদস্যরা। নানা হুমকি দিতে থাকেন। এরপর গত চার-পাঁচ মাসে ‘ব্ল্যাকমেল’ করে তাঁর কাছ থেকে প্রায় ৮ লাখ ৬ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় ওই প্রতারক চক্র।
হাবিব বলেন, ‘আমার মুঠোফোনে আসা অর্থ ফেরত দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু প্রতারক চক্রের সদস্যরা তা ফেরত নেয়নি। পরে তারা ইচ্ছেমতো টাকা চাওয়া শুরু করে। টাকা দিতে না চাইলে তারা আমার মুঠোফোনে থাকা বিভিন্ন ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট নম্বর ও ছবি আত্মীয়স্বজন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। আমার মুঠোফোনের সবকিছু প্রতারক চক্রের নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ায় ভয় পেয়ে যাই।’
এ ঘটনায় ১৮ নভেম্বর হাতিরঝিল থানায় মামলা করেন হাবিব। পুলিশ জানিয়েছে, এর আগে একই প্রতারক চক্রের শিকার আরেক ব্যক্তি কাফরুল থানায় একটি মামলা করেন। এই দুই মামলা তদন্তে নেমে এক চীনা নাগরিকসহ আন্তর্দেশীয় প্রতারক চক্রের ১৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
Leave a Reply