প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) প্রক্রিয়ার বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে পুঁজিবাজার আসছে ওষুধ উৎপাদনকারী কোম্পানি টেকনো ড্রাগস লিমিটেড। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২১ এপ্রিল বিকেল ৪টা থেকে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত কোম্পানিটির বিডিং (নিলাম) অনুষ্ঠিত হয়। বিডিংয়ে টেকনো ড্রাগসের কাট-অব প্রাইস (প্রান্তসীমা মূল্য) নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪ টাকা। তবে আইপিও আবেদনে ৩০ শতাংশ কমে অর্থাৎ ২৪ টাকা করে সাধারণ শেয়ার পাবেন বিনিয়োগকারীরা।
তথ্য মতে, এই বিডিংয়ে ১৪৩ জন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী সর্বোচ্চ ৩৪ টাকা করে দর প্রস্তাব করে। আর সর্বনিম্ন ১৫ টাকা করে একজন দর প্রস্তাব করেন।
এর আগে, গত ৭ মার্চ আইপিও মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে ১০০ কোটি টাকা উত্তোলনের অনুমোদন পায় টেকনো ড্রাগস লিমিটেড। আইপিওর মাধ্যমে টেকনো ড্রাগস কাট অফ প্রাইসের ৩০ শতাংশ ডিসকাউন্ট সাধারণ শেয়ার ইস্যু করবে। এর মাধ্যমে কোম্পানিটি ১০০ কোটি টাকা উত্তোলন করবে।
কোম্পানিটির বিডিংয়ে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০০ কোটি টাকার মধ্যে বরাদ্দ ২১ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এই টাকার শেয়ার পেতে নিলামে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের প্রতিজন সর্বোচ্চ ৪২ লাখ ৫০ হাজার টাকার এবং সর্বনিম্ন ২০ লাখ টাকার দর প্রস্তাব করতে পারবেন।
টেকনো ড্রাগসের ২০২৩ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী, পুনর্মূল্যায়নসহ কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) ২৭.৭৪ টাকা, পুনর্মূল্যায়ন ছাড়া যা ২২.৫৭ টাকা। ওইসময় কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ২.০৮ টাকা। আর বিগত ৫ বছরের ভারিত গড় হারে ইপিএস ৩.২৫ টাকা।
আইপিও থেকে অর্থ উত্তোলন করে কোম্পানিটি নতুন যন্ত্রপাতি ক্রয়, বিএমআরই (নরসিংদী ফ্যাক্টরি), ভবন নির্মাণ (গাজীপুর ফ্যাক্টরি), আংশিক ঋণ পরিশোধ এবং ইস্যু ব্যবস্থাপনা খরচ খাতে ব্যয় করবে।
কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে ইম্পেরিয়াল ক্যাপিটাল লিমিটেড এবং ইবিএল ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির পূর্বে কোম্পানিটি কোনো ধরনের লভ্যাংশ ঘোষণা, অনুমোদন বা বিতরণ করতে পারবে না।
এর আগে, ২০২৩ সালের ১৪ অক্টোবর রাজধানীর একটি হোটেলে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্তি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে রোড শো আয়োজন করে টেকনো ড্রাগস। এতে যোগ্য বিনিয়োগকারী ও সংশ্লিষ্টদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। তাদের সামনে কোম্পানির আর্থিকচিত্র ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।
ওষুধ রপ্তানিতে দেশের শীর্ষ পাঁচ কোম্পানির মধ্যে অন্যতম টেকনো ড্রাগস লিমিটেড। ইতোমধ্যে কোম্পানিটি ওষুধ রপ্তানির মাধ্যমে সুনাম অর্জন করেছে। এ সুনাম ধরে রাখাই কোম্পানিটির মূল উদ্দেশ্য। দেশে ভালো মানের কাঁচামাল আমদানি করে মানসম্পন্ন ওষুধ উৎপাদন করাই কোম্পানিটির মূল চ্যালেঞ্জ। কোম্পানিটি জীবন রক্ষাকারী ওষুধ উৎপাদন ও বিক্রয় করছে এবং লাভজনক কোম্পানি হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কোম্পানির বেশকিছু স্পেশালাইজড প্রোডাক্ট রয়েছে। তাছাড়া, কোম্পানিটি হিউম্যান এবং ভেটেরিনারি মেডিসিনের প্রায় সকল প্রকার ওষুধ উৎপাদন করে থাকে। যেটা কোম্পানিটির ভবিষ্যৎ অগ্রগতির পথ আরো সুগম করবে। বর্তমানে কোম্পানির মোট মূলধন প্রায় ৯৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ৬৩ শতাংশসহ পরিচালন পর্ষদের কাছে ৮৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। বর্তমানে যে দক্ষ পরিচালনা পর্ষদ ও কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন, তাতে ভবিষ্যতে কোম্পানি আরও সাফল্য অর্জন করবে। তাই, বিনিয়োগকারীরা এ কোম্পানিতে নিশ্চিন্তে বিনিয়োগ করতে পারেন। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির পর বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা অনুযায়ী কোম্পানিটির ভালো লভ্যাংশ দেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে।
Leave a Reply