আমাদের পুঁজিবাজার নিজস্ব প্রতিবেদক : শেখ হাসিনা সরকারের শেষ কর্মদিবসে (০৪ আগস্ট) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হয়েছিল ২০৭ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। সেদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ১০৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছিল ৫ হাজার ২২৯ পয়েন্টে।
হাসিনা সরকারের পতনের পরের দিন মঙ্গলবার (০৬ আগস্ট) ডিএসইতে লেনদেন হয় ৭৪৯ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। আর সূচক ১৯৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়ায় ৫ হাজার ৬১৮ পয়েন্টে।
তারপরের দিন বুধবার (০৭ আগস্ট) লেনদেন আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৭৫৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকায়। আর সূচক ১৯২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়ায় ৫ হাজার ৯২৪ পয়েন্টে।
সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) লেনদেন লাফ দিয়ে উঠে যায় ১৬০০ কোটি ৬৪ লাখ টাকায়। আর সূচক আরও শক্তিমত্তা নিয়ে ৩০৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়ায় ৫ হাজার ৯২৪ পয়েন্টে।
অর্থাৎ অন্তবর্তী সরকার গঠনের দিন পর্যন্ত ডিএসইর সূচক বেড়েছে ৬৯৫ পয়েন্ট। আর লেনদেনে ২০৮ কোটি থেকে ছাড়িয়েছে ১৬০০ কোটি টাকায়।
আজ অন্তবর্তী সরকারের প্রথম কর্মদিবস রোববার ডিএসইর সূচক বেড়েছে ৯১ পয়েন্ট। আর লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ১০ কোটি টাকা। এটি গত দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন।
এর আগে ২০২২ সালের ৭ সেপ্টেম্বর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ২৯৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে ডিএসইতে গত দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এতোদিন তারল্য সংকটের দোহাই দিয়ে শেয়ারবাজারের লেনদেন তলানিতে নেমেছিল। লেনদেন ৫০০ কোটি ছাড়ানো ছিল রীতিমতো দুস্কর। তখন শেয়ারবাজারের চারপাশে কেবলই ছিল তারল্যের হাহাকার।
অথচ দুই-চার দিনের ব্যবধানেই এখন শেয়ারবাজার তারল্য প্রবাহে সয়লাব। এখন শেয়ারবাজার লেনদেন এবং সূচকে কেবল ইতিবাচক লাফ। আশা ও প্রত্যাশা নিয়ে সামনের পথে শেয়ারবাজার।
অন্তবর্তী সরকারে যিনি শেয়ারবাজার তথা অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়েছেন, তিনি শেয়ারবাজারের একজন বিশ্লেষক-বোদ্ধা। যার উপর নির্ভর করে শেয়ারবাজারের প্রাতষ্ঠানিক ও ছোট-বড় বিনিয়োগকারী ফিরছেন বড় আস্থা ও ভরসা নিয়ে। বাজার সংশ্লিষ্টরা এখন দেশের শেয়ারবাজার নিয়ে বড়ই আশাবাদী।
রোববারের বাজারপর্যালোচনা
আজ ১১ আগস্ট দেশের শেয়ারবাজারে উত্থান-পতনের বড় ঝাপ্টা দেখা গেছে। আগের দিনের উত্থানের বড় ধারাবাহিকতায় ডিএসইর মূ্ল্যসূচক ডিএসইএক্স আজ সকাল ১০টা ২১ মিনিটে ২৯১ পয়েন্ট বেড়ে যায়। যে সূচক দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে ৫৪ পয়েন্ট মাইনাস হয়ে যায়।
একইদিনে এতো বড় উত্থানের পরে বাজার ঋণাত্মক হওয়ার ঘটনা বিরল। সেই ঋণাত্মক থেকে সূচকটি আবার দিনশেষে প্রায় ১০০ পয়েন্ট ইতিবাচকতায় টার্ন নেয়। যদিও শেষবেলায় অ্যাডজাস্টমেন্টের কারণে সূচকের উত্থান স্থির হয় ৯১ পয়েন্টে।
এদিন ডিএসইতে ২ হাজার ১০ কোটি টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। আগের দিন হয়েছিল ১ হাজার ৬০৬ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এই হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৪০৩ কোটি ৬২ লাখ বা ২৫ শতাংশ।
আজ ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৪০০টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ১৭৩টি বা ৪৩.২৫ শতাংশের। আর দর কমেছে ২০৭টি বা ৫১.৭৫ শতাংশের ও দর পরিবর্তন হয়নি ২০টি বা ৫ শতাংশের।
অপর শেয়ারবাজার সিএসইতে আজ ৩০ কোটি ৮৯ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৯৫টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ১৯৪টির, কমেছে ৮৬টির এবং পরিবর্তন হয়নি ১৫টির।
এদিন সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪৮২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁডিয়েছে ১৭২৮২ পয়েন্টে।
Leave a Reply