আমাদের পুঁজিবাজার নিজস্ব প্রতিবেদক : আমাদের পুঁজিবাজার নিজস্ব প্রতিবেদক : সংসদীয় ২৯৮টি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ঘোষণা করলেও জোটভুক্ত দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার পর আসন সমন্বয় করা হবে বলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ জানিয়েছেন।
আওয়ামী লীগ জোটগতভাবে নির্বাচন করবে জানিয়ে তিনি বলেছেন, জোটভুক্ত দলগুলোর সঙ্গে এখনও সমন্বয় না হওয়ায় প্রায় সব আসনে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
আগামী ৭ জানুয়ারির ভোটকে সামনে রেখে গত ১৮ থেকে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত চার দিন মনোনয়নে আগ্রহীদের কাছে ফরম বিক্রি করে ক্ষমতাসীন দল। পরে রোববার আওয়ামী লীগ কুষ্টিয়া-২ ও নারায়ণগঞ্জ-৫ ফাঁকা রেখে ২৯৮টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা করেছে।
সচিবালয়ে সোমবার সিনেমা হল মালিকদের নবনির্বাচিত কমিটির সঙ্গে মতবিনিময়ের পর আসন সমন্বয় নিয়ে কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।
২০০৮ সাল থেকেই আওয়ামী লীগ জোটভিত্তিক নির্বাচন করে আসছে। ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচন বিএনপি ও তার জোটের শরিকরা বর্জন করার পর সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মহাজোট করেনি। আর ২০১৮ সালে একদশ সংসদ নির্বাচনেও জোট বেঁধে ভোটে নামে আওয়ামী লীগ।
সে প্রসঙ্গ তুলে হাছান মাহমুদ বলেন, “২০০৮ সালেও আমরা জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করেছিলাম, সেবারও কিন্তু প্রায় ৩০০ আসনে নমিনেশন দেওয়া হয়েছিল। পরে মহাজোটের মধ্যে সমন্বয় করা হয়েছিল।
“গতবারও প্রায় সব আসনে নমিনেশন দিয়ে পরে জোটের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছিল। এখনও ২৯৮ সিটে নমিনেশন দেওয়া হয়েছে। আমরা প্রথমেই বলেছি, আমরা জোটবদ্ধ নির্বাচন করব, সেটি কিন্তু আমাদের দলের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।”
আওয়ামী লীগ ১৪ দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে ভোটে নামা ছাড়াও জোটের অন্যান্য দলের সঙ্গে প্রয়োজনে সমন্বয় করে আসন ঠিক করবে বলে জানান হাছান মাহমুদ।
“নমিনেশন দিলেও জোটের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে, কোন জায়গায় কিভাবে করা হবে সেটি যেহেতু ঠিক করা হয়নি সেজন্য সব আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। পরে জোটের সাথে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমরা ১৪ দলীয় জোটগতভাবে নির্বাচন করব। এছাড়া অন্যান্যদের সঙ্গে যদি সমন্বয় করতে হয় সেটিও করা হবে।”
ঢাকা-৮ আসনে বাংলাদেশ ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের জায়গায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমকে মনোনয়ন দেওয়ায় কোনো ধরনের ‘বিব্রতকর’ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কিনা প্রশ্নে হাছান বলেন, “অবশ্যই নয়। জোটের নেতারা কোথায় নির্বাচন করবে এবং তাদের সাথে আমাদের সমঝোতা, সমন্বয় হবে তখন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
জনপ্রিয়তার দৌড়ে যারা পিছিয়ে পড়েছেন এবং বিভিন্ন কারণে বিতর্কিত, তাদের এবার মনোনয়ন দেওয়া হয়নি বলে জানান তথ্যমন্ত্রী।
এ ঘটনাকে ‘স্বাভাবিক’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের ৭১/৭২ জন বাদ পড়েছে, প্রতি নির্বাচনেই কিছু প্রার্থী বাদ পড়ে। এবার আগে থেকেই বলা হয়েছিল যারা জনপ্রিয়তার দৌড়ে পিছিয়ে গেছে, কোনো কারণে বিতর্কিত হয়েছে, তাদেরকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না।
“সেই কারণে এবার অনেক বেশি প্রার্থী বাদ পড়েছে, বাদ পড়াটা স্বাভাবিক। সেখানে কে মন্ত্রী বা বড় নেতা সেটি বিষয় নয়, জনপ্রিয়তা যার নেই তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি।”
প্রার্থী নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রীর তদন্ত রিপোর্ট কাজ করেছে জানিয়ে হাছান বলেন, “শেখ হাসিনা মনোনয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান। এর বাইরে দুই বছরের বেশি সময় ধরে দলের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী নানাভাবে তদন্ত করাচ্ছিলেন, সেই রিপোর্টগুলো সংগ্রহ করে জনপ্রিয়তা ও দলের প্রয়োজনীয়তার নিরিখে বিবেচনা করা হয়েছে, জয়ী হতে পারে এমন প্রার্থী নির্বাচিত করা হয়েছে।”
তথ্যমন্ত্রীর কথা হল, এবার বহু রাজনৈতিক দল ভোটে অংশ নিচ্ছে, তাই নির্বাচনে জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ প্রত্যাশা করছেন তিনি।
“কোন দল অংশগ্রহণ করল সেটির চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে জনগণের অংশগ্রহণ আছে কী না।”
হাছান মাহমুদ বলেন, “রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি তৃণমূল বিএনপির নেতৃত্বে বা অন্যান্যভাবে নেতারা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। কারণ বিএনপি দেশের মানুষের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে এবং দেশের মানুষের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের এই অবরোধের ডাকে তাদের সমর্থকদেরই সমর্থন নেই, কর্মীদেরও নাই।”
তথ্যমন্ত্রীর ভাষ্য, বিএনপির ডাকা অবরোধের মধ্যেও রাস্তাঘাটের যানজট প্রমাণ করে আন্দোলনের ডাক হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে, নির্বাচনী ডামাডোল যখন আরও শুরু হবে এগুলো কেউ মনেও রাখবে না।
Leave a Reply